অনন্ত নক্ষত্রমালার দিকে তাকিয়ে সন্দীপ টাইম ট্রাভেলে
কফি শপ সম্ভাবনার কথা ভাবছিল। এমন বিশাল পরিষ্কার আকাশের এই প্রাচীন নিস্তব্ধতা
কখনও তরঙ্গাকারে আবার কখনও প্যাকেটে প্যাকেটে পরিবেশন করা হয়ে চলেছে আমাদের হাঁ
করে থাকা শিশুপাখির অসীম কৌতূহলে। নানা রঙের উল বোনা সন্ধেগুলো পথ দেখিয়ে নিয়ে গেল
এ গলি ও গলি দিয়ে যেন আসলে সে রাস্তা হারিয়ে ফেলা ছাত্র।
ছাত্র বলতে মনে পড়ে, ছোট হয়ে আসা চক আর লিনিয়ার মোশন। যা
কিছু মৃত, তা থেমে আছে Space-এ। Time-এর সঙ্গে হয়ত চলেছে সেও কিন্তু তার গতি নেই। সময় থামিয়ে
দিতে পারে এমন সুগন্ধ সন্দীপ কোনো এয়ারপোর্টে খুঁজে পায়নি। শুধু কবিদের লেখায়
পড়েছে, কিছু কিছু হাসিতে বা কান্নায় থামানো যেতে পারে সময় কিন্তু স্কেপ্টিক-রা এত
সহজে কিছু বিশ্বাস করতে চায় না। সন্দীপ ফিরে আসে বাস্তবে, জীবনে। জীবন মানেই গতি
তবে uniform velocity motion। চলন্ত ট্রেনে উপর দিকে বল ছুঁড়ে
দেখে সন্দীপ, বল ফিরে আসে নিজের হাতেই যদি ট্রেনের গতি থাকে uniform। জীবন-ও ছুটে চলে, একঘেয়ে প্রতি সকালের পাউরুটি মাখনের
মতো, যেন ছুটতে বলেছে তাই ছুটছে - constant velocity। থামলেই মৃত্যু। অনন্ত নক্ষত্রমালার দিকে তাকিয়ে সন্দীপ ছুটে চলেছে জীবনের
সঙ্গে এক-ই গতিতে। এভাবে চলতে থাকে সবাই আর কেউ কিছু টের পায় না কখন নিভে যাওয়ার সময়
এসে চুলে বিলি কেটে চলে যায়। আমরা ততদিনে - comfortably numb।
কিন্তু এই বেঁচে থাকার বহু সূত্রের বহু ফর্মুলা লেখার
পরেও কিছুই যেন মিলতে চায় না। সন্দীপ টেলিস্কোপের মধ্যে দিয়ে দেখতে থাকে অন্য
আকাশে অনুভূতি-রা ঘুরপাক খাচ্ছে, কখনও আতশবাজির মতো ফেটে পড়ছে উল্লাসে। এই আকাশের
সন্ধান করতে গিয়েই যেন প্রায় ১০০ বছর আগে আইনস্টাইন, theory of general relativity-র হদিস পান। সন্দীপ বুঝতে পারে, ঠিক যেমন gravity এসে special relativity-কে বদলে দিল, space-time-এ curvature সৃষ্টি করল, আমাদের জীবনে-ও কিছু একটা এসে সব কিছু
পাল্টে দিতে পারে। সেটাই ভালবাসা। প্রেম আমাদের জীবনের গতি পাল্টে দিতে পারে। তখন
কিন্তু চলন্ত ট্রেনের ভেতর উপর দিকে বল ছুঁড়লে হাতে এসে পড়বে না। একঘেয়ে জীবনের
সহজ অঙ্কগুলো বিশাল কঠিন আকার নেবে। Accelerated motion-ই হল প্রেম। Acceleration এমন এক জিনিস যা অনুভব করা যায়। থেমে
থাকা লিফট চলতে শুরু করে দিলে হাঁটু কেঁপে ওঠে। চক্রাকারে ঘুরতে থাকা গাড়ির ভেতর
মানুষের শরীর বন্ধ দরজায় গিয়ে ধাক্কা মারে। তার মানে আমরা গতি পালটালে আসলে বুঝতে
পারি। সেটা বাড়লেও পারি, কমলে-ও পারি।
ওই দূরে ঝাউ বনের সারি। সেখানে উজ্জ্বল কিছু সামুদ্রিক
মাছ যেন singularity সন্ধানে উড়ে বেড়ায়। সন্দীপ সেখানে
যেতে চায়। বারবার accelerate করতে চায়। ওই তো ওখানেই যেন জীবনের
মানে। নাহলে আর কী আছে পৌষের রাতে লেপ গায়ে দিয়ে প্রকৃত ইচ্ছের কাছে বারবার
মিথ্যাচারে থুরথুর করতে থাকে প্রত্যেক আঙুল আর ক্রমে থেঁতো হয়ে যায় সমস্ত confidence।
অনুপম রায় (১৩/০১/২০১৯)
3 comments:
খুব সাবলীল তোমার কনসেপ্ট । কিছু একটা ভাবনা আন্দাজ করলেই, একটা আনএক্সপেক্টেড টার্ন ।
এই জন্যেই হয়তো ইউনিক আর আকর্ষণীয় দুটো একসাথে হয়ে ওঠে তোমার সমস্ত কাজ ।
অনুপম দা, তুমি একবার বলেছিলে, তুমি এমন ভাবে গান লিখ যাতে শ্রোতাদের গানটা বুঝতে বার করে শুনতে হয়, যার ফলে শ্রোতারাও আগ্রহী ও কৌতূহলী প্রবন হয়।
টিক তাই তোমার লেখাটাও অগোছালো ভাবে অনেক দামি কথা অনায়াসে বলে ফেলতে পারে।
এই কথাটা হয়তো এখানে বলার কথা নয় কিন্তু আর কোথায় বললে আপনার চোখে পড়বে না বুঝতে পেরে এখানেই বলছি। সি আর পার্কের মেলা গ্রাউণ্ডে ১২ই জানুয়ারিতে আপনার অনুষ্ঠান ভীষণ ভীষণ উপভোগ করেছি। মন ভালো করে দিয়েছেন আপনি। থ্যাংক ইউ।
Post a Comment